মাহফুজের বক্তব্যের সময় বোতল নিক্ষেপ

প্রকাশিত: ১:১৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৫

মাহফুজের বক্তব্যের সময় বোতল নিক্ষেপ

যমুনার সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। বুধবার (১৪ মে) যমুনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংলাপের পর তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এই আহ্বান জানান।

 

উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ‘আপনারা যেন আন্দোলন থেকে ফিরে গিয়ে ক্যাম্পাসে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন। দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আবারও দাবি তোলা যাবে। কিন্তু আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করা। উচিতউপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনসংকট নিয়ে ড. ইউনূস আজ বুধবার অবগত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষও এই সংকট সম্পর্কে জানেন। আমরা আশা করছি, দ্রুতই এই সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বাজেটের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপন এবং এর গতি ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আমরা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বসে আলোচনা করব।’

 

আমরা একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিয়েছি। ড. ইউনূস ঢাকায় ফিরে এলে ভিসি মহোদয়ের সঙ্গে বসবেন। বাজেট পাস হবে, সেখানে এই সংকট নিরসনের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হবে। যেহেতু এখানে একাধিক মন্ত্রণালয় জড়িত, তাই একাধিকবার বৈঠক করতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের বার্তা হলো—আপনারা যেন আন্দোলন থেকে ফিরে গিয়ে ক্যাম্পাসে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেন। দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আবারও দাবি তোলা যাবে। কিন্তু আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করা উচিত।

 

 

শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, তাঁদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে এবং সেই পুলিশ সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে আমরা বলেছি, পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যদি কেউ বাড়াবাড়ি বা উসকানিমূলক কিছু করে থাকেন, তাহলে বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সব সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলি, ছাত্র-শিক্ষক বা শ্রমিকদের আন্দোলনে প্রথমে সংলাপ করতে হবে, পরে প্রয়োজনে অন্য ব্যবস্থা।

 

সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং করার সময় মাহফুজ আলমের ওপর বোতল নিক্ষেপ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের পাশে দাঁড়ানো মাথায় ক্যাপ পরা এক তরুণ উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দিকে বোতল ছুড়ে মারছেন। এ সময় তাঁরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগানও দেন।

 

বোতল নিক্ষেপের বিষয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘যারা আমার সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছে, তারা এ হামলা করেনি। হামলা করেছে যারা এ আন্দোলনে ছিল না। আমরা শুধু এতটুকু বলতে চাই, আজকে থেকে ‘চল চল যাই, যমুনায় যাই’—কর্মসূচি আর হতে দেওয়া হবে না। এই রাজনীতি আমরা আর হতে দেব না। আমরা এ ক্ষেত্রে শক্ত ভূমিকায় উত্তীর্ণ হব। শিক্ষার্থীদের ভেতরে যারা এ কর্মকাণ্ড করেছে, তারা অনেক বড় ভুল করেছে। তারা সাবোটেজ করার অভিপ্রায় নিয়ে এখানে এসেছে। শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের আলাদা করে রাখা এবং তাদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।’

 

 

 

 

 

এ বিষয়ে মাহফুজ আলম আরও বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী, যাদেরকে আমি স্যাবোট্যুর মনে করি, তারা এ কাজটি ঘটিয়েছে। তারা আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে আন্দোলন স্যাবোটাইজ করে।’

 

উপদেষ্টা মাহফুজের ব্রিফিংয়ের পর নিজেদের মধ্যে সংলাপে বসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা। সংলাপ শেষে জানান, ‘সকল ছাত্রসংগঠন আমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। প্রশাসনকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই এবং সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করুন এবং উপদেষ্টা মহোদয়ের নিরাপত্তা প্রদান করুন।

 

 

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দিকে রক্তচক্ষু দিয়ে তাকাবেন না, বাঁকা চোখে তাকাবেন না। আমরা এই দাবির পক্ষে অনড় রয়েছি। আমরা সুস্পষ্ট ঘোষণা ব্যতীত কোনোভাবে এই জায়গা ছেড়ে যাব না।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ