
খেলা প্রতিবেদক | ঢাকা
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঘূর্ণি উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে চমকে দেওয়ার কৌশল নতুন কিছু নয়। তবে এই ঘরের মাটির কৌশলই এখন বারবার বুমেরাং হয়ে ফিরছে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে। ওয়ানডে হোক কিংবা টেস্ট—মিরপুরের কালো মাটির ধীরগতি উইকেটে রান তোলা সবসময়ই এক যুদ্ধ।
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের চলমান ওয়ানডে সিরিজেও চিত্র একই। আধুনিক ওয়ানডে ক্রিকেটে যেখানে নিয়মিত ৩০০–৩৫০ রানের দেখা মেলে, সেখানে মিরপুরে ২০০ রান তুলতেই হাঁসফাঁস করতে হয় ব্যাটারদের।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ২০৭ রান করে ৭৪ রানে জিতেছিল, কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২১৩ রানে থেমে সুপার ওভারে হেরে যায় টাইগাররা।
মিরপুরের পিচ নিয়ে বহু সমালোচনা হয়েছে, তবে এবার সেই আলোচনায় যোগ দিলেন ক্যারিবীয় বাঁহাতি স্পিনার আকিল হোসেন।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি রসিক ভঙ্গিতে বলেন,
“যখন টিভি চালু করলাম, প্রথমে ভেবেছিলাম টিভির রঙ নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ স্ক্রিন একদম কালো। পরে বুঝলাম, পিচটাই এমন কালো!”
মিরপুরের এই কালো পিচেই বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করেছেন আকিল। মূল ম্যাচে তিনি ১০ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নেন।
সুপার ওভারে ওয়াইড ও নো বল করেও শেষ পর্যন্ত দলের জয় নিশ্চিত করেন ৯ রানে।
টি-টোয়েন্টি দলে থাকলেও ওয়ানডে সিরিজে আকিলের নাম ছিল না। তবে চোটের কারণে শামার জোসেফ ও জেদিয়া ব্লেডস ছিটকে পড়ায় শেষ মুহূর্তে তাঁকে দলে ডাকা হয়।
দীর্ঘ ভ্রমণের পর বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় ঢাকায় পৌঁছান এই ক্যারিবীয় স্পিনার। কিন্তু বিশ্রাম না নিয়েই বিকেলে মাঠে নেমে দেখালেন ঘূর্ণির জাদু।
আকিল বলেন,
“রাত চারটায় হোটেলে পৌঁছেছি। কিন্তু এটা কাজেরই অংশ। যখন প্রতিশ্রুতি থাকে, তখন শতভাগ দিতে হয়। প্রায় হারতে বসা ম্যাচে দলকে জেতাতে পেরেছি, এটিই সবচেয়ে বড় তৃপ্তি।”
মিরপুরের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল নামায় চারজন স্বীকৃত স্পিনার—খারি পিয়ের, গুড়াকেশ মতি, আকিল হোসেন ও রস্টন চেজ।
তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন খণ্ডকালীন স্পিনার আলিক আথানাজ।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই পাঁচ স্পিনার মিলে পুরো ৫০ ওভারই বোলিং করেন।
ওয়ানডে ইতিহাসে এটাই প্রথমবার, যখন একটি ইনিংসের প্রতিটি ওভার স্পিনাররা করেছেন।
ফলাফলও তাঁদের পক্ষে—রোমাঞ্চকর সুপার ওভারে ১ রানে জয় তুলে সিরিজে ১–১ সমতা ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় একই ভেন্যু—মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে।
সিরিজ এখন সমতায়, তাই মিরপুরেই নির্ধারিত হবে ওয়ানডে সিরিজের ভাগ্য।