সিলেট ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২৫
যাকাতের কাপড় কিনে বাড়ি ফিরার পথে বিএনপি নেতার গাড়ির গতিরোধ করেন মোস্তাকসহ কয়েকজন যুবক অত:পর
সিলেট এসএমপির বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির বির্তকৃত কর্মকান্ড যেনো কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা। প্রতিদিনই আসছে নানা রকম অভিযোগ। দিনে রাতে অন্তত ১০/১২ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ যেনো নিরব দর্শক। যখন পথচারিরা ছিনতাইকারী ধরে উত্তম অধম দিতে থাকে যখন বাংলা ছবির স্টাইলে হাজির হন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। তখন লোকজনের হাত থেকে বাঁচাতে এসব ছিনতাইকারী আটক করে থানায় নিয়ে যেতে বাধ্য হন। পরে নাটক সাজিয়ে নিজের কৃতিত্ব দেখাতে আদালতে চালান দেন। গত ৫ আগষ্টের পর সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকা ছিনতাইকারী ওমাদক ব্যবসায়ীদের ঘাটি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।
সম্প্রতি সিলেট নগরীর মহাজনপট্টির একটি দোকানে কাপড় কিনতে আসেন কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক দেলোওয়ার হোসেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি একটি নোহা গাড়ি নিয়ে যাকাতের কাপড় কিনতে যান মহাজনপট্টির হাজী সোনাই মিয়ার দোকানে। সেখান থেকে তিনি কয়েক লক্ষ টাকার যাকাতের কাপড় খরদি করেন। কাপড় ভর্তি নোহা গাড়িটি সোনাই মিয়ার দোকান থেকে বন্দর বাজার পূবালী ব্যাংকের সামনে আসা মাত্রই এএসআই ইলিয়াসের সাথে থাকা সোর্স মোস্তাক আহমদসহ কয়েকজন সাদা পোষাকধারী যুবক গাড়ির গতিরোধ করে। এসময় ফিল্মি স্টাইলে মোস্তাকের নেতৃত্বে এসব যুবক দেলোয়ার হোসেনের গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করতে চেষ্টা করতে থাকে এমনকি তাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামানোর চেষ্টায় টানা হেচড়া শুরু করে। দুরে দাড়িয়ে সবই দেখছিলেন ফাঁড়ির এএসআই ইলিয়াস হোসেন। কারণ তার নেতৃত্বে এরা দেলোয়ার হোসেনের গাড়িটি আটক করে। এ সময় এএসআই ইলিয়াসের সাথে থাকা মোস্তকাসহ কয়েকজন দেলোয়ার হোসেনের গাড়িতে থাকা যাকাতের কাপড়ের বান্ডিল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি দেখতে পেয়ে দেলোয়ারের পূর্ব পরিচিত কয়েকজন ব্যবসায়ী সহ পাশ্বর্তী মসজিদের ক্যাশিয়ার ওমহাজন পট্টির এক ব্যবসায়ী এগিয়ে আসলে তিনি এএসআই ইলিয়াসের সাথে কথা বলে তার বাহিনীকে নিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। পরে এএসআই ইলিয়াসসহ তার বাহিনী ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ভোক্তভোগী দেলোওয়ার হোসেন জানান, তিনি মহাজনপট্টির ব্যবসায়ী হাজি সোনা মিয়ার দোকান থেকে যাকাতের কাপড় কিনে বাড়ি ফিরার পথে মহাজনপট্টির কাষ্টঘরের সম্মুখে গাড়ির গতিরোধ করেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সোর্স হিসাবে পিরিচিত মোস্তাক কয়েকজন যুবক। মোস্তাক নিজেকে ফাঁড়ির পুলিশ পরিচয় দিয়ে দেলোয়ারের কাছে জানতে চান, গাড়িতে কি মাল, কোথায় থেকে আনছেন, মালগুলো দেখাতে হবে। এক পর্যায়ে দেলোয়ার বলেন, আমি হাজি সোনা মিয়ার দোকান থেকে যাকাতের কাপড় কিনেছি এবং বাড়ি যাচ্ছি আপনি কে? তখন মোস্তাক বলে আমি পুলিশের লোক। আপনার এই কাপড় গুলো অবৈধ। তুমি আমাদের পরিচয় দিয়ে কি করবা। আপনি গাড়ি থেকে নেমে আসেন থানায় চলেন। তখন দুরে দাড়িয়ে বিষয়টি দেখছিলেন বন্দর ফাঁড়িতে কর্মরত এএসআই ইলিয়াস। কারণ ইলিয়াসই মোস্তাকদের দেলোয়ারের গাড়ি আটক করতে বলেছিলেন। যখন পরিচিত লোকজন উপস্তিত হতে থাকেন। তখন অবস্থা বে-গতিক দেখে এএসআই ইলিয়াস নিজের সোর্সদের নিয়ে কেটে পড়েন ঘটনাস্থল থেকে। বিষয়টি তিনি সাথে বন্ধর ফাঁড়ির আইসি এসআই উবাদুল্লাহকে অবহিত করেন। বিস্তারিত ঘটনা বলে মোস্তাকসহ ঘটনার সময় উপস্তিত থাকা যুবকদের আটক করতে বলেন কিন্তু উবাদুল্লাহ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। দেলোয়ার হোসেন বলেন তিনি বিষয়টি নিয়ে ফাঁড়ির আঁইসির সাথে কথা বললেও তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালো দেলোয়ার হোসেন জানান। সেদিনের ঘটনার সময় যেসকল যুবক উপস্তিত ছিলো তারা সবগুলো পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা একজন আরেকজনের নাম ধরে ডাকছিলো। পরে এএসআই ইলিয়াসের সাথে তারা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। যেহেতু ঈদের ঝামেলায় তিনি ব্যস্থ আছেন তাই ঈদ পরে তিনি আইঁসিসহ এএসআই ইলিয়াসসহ উপস্তিত সোর্সদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সেদিনের উপস্তিত সবার নাম ঠিকানা তিনি সংগ্রহ করেছেন। স্থানীয় ব্যসায়ীরা অভিযোগ করেন, এখন পুলিশের সাথেই চিনতাই, হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘরে বেড়ায় সিলেট শহরের অলিগলি। এমন চিত্র রাতে বন্দরবাজারের হোটেল মশরফিয়ার সম্মুখ, করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনে, হোটেল মজলিসের সামনে গেলেই যে কারো চুখে পড়বে। বন্দর ফাঁড়ির আইসি উবাদুল্লাহ বা এএসআই ইলিয়াস যেখানে যান সেখানে সাথে হাজির থাকনে মোস্তাক। গত কয়েকদিন জিন্দাবাজার এলাকায় ছিনতাইকারী মোস্তাক সামনে যাচ্ছেন আর ফাঁড়ির আইসি পিছনে পিছনে গিয়ে ফুটপাতে অভিযান চালাচ্ছে। মোস্তাক যে দোকান বলে দিচ্ছে সে দোকানে চালাচ্ছেন অভিযান।
বিশেষ করে দিনের বেলা মহাজনপট্টি কিংবা কাষ্টঘরের রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করতে এখন ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু এসব ঘটনা প্রকাশ্য ঘটলে ফাঁড়ির আইসি কিংবা এএসআইদের কিছু করার থাকেনা। কারণ তারাও নিরব দর্শক। তাদের সাথে তাকে আরেক দল ছিনতাইকারী। রাত হলেই আইসি উবায়দুল্লাহ এএসআই ইলিয়াস কাষ্টঘর রাস্তার সম্মুখে সাদাপোষাকে দাড়িয়ে থাকেন। ভারত থেকে আসা চিনি গাড়ির টাকা উত্তোলন করতে। পাশাপাশি পথচারিদের মাদক দিয়ে ফাঁসানোর মতো একটি চুর পুলিশ খেলা খেলতে দেখা যায়। বিগত সরকারের আমলে বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবরের নির্মম নির্যাতনে রায়হান আহমদ নামে এক যুবক মারা গেলে ফাঁড়ির টর্চার সেল নিয়ে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে শুরু করে। পুলিশ ফাঁড়িতে ব্যাপক রদবদল করা হয়। সেই সময় ব্যাপক রদবদল করা হয় কতোয়ালী পুলিশের এই ফাঁড়িতেও। সে সময় ফাঁড়িতে আসেন এএসআই ইলিয়াস হোসেন। ফাঁড়িতে এসে নিজের রাজত্ব্য কায়েম করতে থাকেন। নিজেই গড়ে তুলেন একটি সিন্ডিকেট। তখন একাধিক বির্তকৃত কর্মকান্ডের জন্য থাকে ফাঁড়ি থেকে বদলী করা হয়। কিন্তু তদবীর করে আবার তিনি আসেন বন্দর পুলিশ ফাঁড়িতে। যদিও এখন নতুন করে তার বদলীর আদেশ হয়েছে। কিন্তু তদবির করে আছেন বহাল। বিগত বছরের ৫ই আগষ্ট বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি পুড়িয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। সেই থেকে থানায় বসেই চলছে পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম। ফাঁড়ির সাবেক আইসি কল্লোল গোস্বামী একাধিক মামলায় পালাতক হলে সেখানে আইসি হিসাবে নিয়োগ পান বর্তমান আইসি উবাদুল্লাহ। তিনি আসার পর সখ্যতা গড়ে তুলেন একাধিক বির্তকৃত কর্মকান্ডে আলোচিত ইলিয়াসের সাথে।
এখন ফাঁড়িতে থাকা আইসি সহ এএসআই ইলিয়াসের টার্গেটই হচ্ছে, ভোরের বাস বা ট্রেনের যাত্রী, সিলেটে আসা পর্যটক, মাজারে আসা দম্পতি, সাধারণ ব্যবসায়ীরা। ফাঁড়িতে না নিয়ে নিরীহ পথচারীদের আটকিয়ে পিটিয়ে বা মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করাই তাদের মূলকাজ হয়ে দাড়িয়েছে। বিষয়টি আপোষ রফার জন্য নিজেরাই সাথে রাখেন সোর্স পরিচয়দারী কয়েকজনকে। মাদকদ্রব্য উদ্ধারের নামে রাতে নিজেদের সোর্সসহ এএসআই ইলিয়াস ও আইসি উবাদুল্লাহ দাড়িয়ে থাকেন কাষ্টঘর কিংবা বন্দরবাজারের কোন অন্ধকার গলিতে সেখানে পথচারি যাওয়া মাত্রই নিজেদের কাছে থাকা মাদক দিয়ে নিরিহ পথচারিকে ফাঁসিয়ে টাকার বিনিময়ে বাণিজ্যই তাদের মূল উিউটি। তাদের সাথে সোর্স হিসাবে কাজ করেন সিলেট নগরীর চিহ্নিত কয়েকজন ছিনতাইকারী। তারা নিজেরাই ছিনতাই মামলায় একাধিকবার গ্রেফতার হলেও এখন আইসি উবায়দুল্লাহ ও এএসআই ইলিয়াস এসব ছিনতাইকারী নিয়ে সিলেট নগরীতে ধাবড়ে বেড়ান অপরাধীদের ধরতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসব ছিনতাইকারীদের পকেটেই থাকে মাদক ও ধারালো অস্ত্র-চাকু। গত তিন-চারদিন আগে জনৈক আমিন নামের একজনকে এসব ছিনতাইকারীরা ধারালো চাকু-বেøড দিয়ে আঘাত করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এভাবে ছিনতাইয়ের র্টাগেট করা ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল ফোন কিংবা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিতে বাধা দিলে প্রকাশ্যে ধারালেঅ অস্ত্র নিয়ে হামলা করে ছিনতাইকারীরা। ফাঁড়ির পুলিশের কাছে অভিযোগ দিলে তারা বলে আমাদের কিছু করার নাই আপনারা হাসপাতাল যান, কোর্টে মামলা করেন।
সূত্র – জাতীয় সাপ্তাহিক আয়না
প্রধান উপদেষ্টা: বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক,
উপদেষ্টা : খান সেলিম রহমান, জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকা, ঢাকা ।
উপদেষ্টা : মোহাম্মদ হানিফ,
প্রকাশক : মোঃ ফয়ছল কাদির,
সম্পাদক : মাছুম কাদির,
সিলেট অফিস : রংমহল টাওয়ার(৪র্থ তলা) বন্দরবাজার সিলেট,৩১০০। মোবাইল নং-০১৭১৮৬২০২৯১,
ই-মেইল : Foysolkadir503@gmail.com,
Design and developed by DHAKA-HOST-BD