যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো আবারও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে দিক থেকেই সাম্রাজ্যবাদী হুমকি আসুক—আমাদের পবিত্র জন্মভূমির প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করতেই হবে।’
বুধবার (২৬ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট–এর খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী কারাকাসে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মাদুরো ঐতিহাসিক ‘পেরুর তলোয়ার’ উঁচিয়ে বক্তব্য দেন। ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে বিজয়ের স্মারক হিসেবে এ তলোয়ার সিমন বলিভারকে উপহার দেওয়া হয়েছিল। নিজেকে বলিভারের উত্তরসূরি হিসেবে উল্লেখ করে মাদুরো বলেন, ‘দেশমাতৃকা পবিত্র—একে সম্মান করতেই হবে। ব্যর্থতার সুযোগ নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক অভিযান নিয়ে উদ্বেগ
সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় নতুন এক দফা সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র—যা ভেনেজুয়েলার ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী অন্তত ৮০ জনকে হত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ওয়াশিংটন দাবি করছে—এগুলো ছিল নৌপথে মাদক পাচার রোধে পরিচালিত অভিযান। তবে হামলার শিকার বেশ কিছু নৌযান ভেনেজুয়েলা থেকেই ছেড়েছিল বলে জানা গেছে।
মাদুরো এসব কার্যক্রমকে ‘ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত’ বলে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানান। অনেকেই এই ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
ভেনেজুয়েলা–যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনায় কিউবার সমালোচনা
ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেস বলেন, ‘তারা আমাদের তেল-গ্যাস, সোনা, হিরা, লোহা, বক্সাইট—সবকিছু কোনো মূল্য না দিয়ে নিতে চায়। প্রাকৃতিক সম্পদই তাদের লক্ষ্য।’
এদিকে কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রদ্রিগেস যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতিকে ‘অতিরঞ্জিত ও আগ্রাসী’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে অগণিত প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং পুরো পশ্চিম গোলার্ধ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।’
ট্রাম্প এখনো স্বীকৃতি দেননি মাদুরোকে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনোই মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেননি। গত বছরের বিতর্কিত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনো বিরোধীরা দাবি করে আসছে—মাদুরো প্রকৃতপক্ষে পরাজিত হয়েছিলেন।