১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজশাহীতে ৫৩ বছর পর উচ্ছেদের মুখে আদিবাসীপাড়া

admin
প্রকাশিত ০৩ সেপ্টেম্বর, বুধবার, ২০২৫ ১৯:১১:১৯
রাজশাহীতে ৫৩ বছর পর উচ্ছেদের মুখে আদিবাসীপাড়া

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার

Manual1 Ad Code

রাজশাহীর মোল্লাপাড়া এলাকার আদিবাসীপাড়ায় বসবাসরত পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোকে আগামী রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) উচ্ছেদ করা হবে। এর আগে আগামী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) খাসি জবাই করে মহল্লাবাসীর জন্য ভোজের আয়োজন করেছেন জমির দাবিদার সাজ্জাদ আলী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫৩ বছর আগে ১৬ কাঠা জমিতে ছয়টি পাহাড়িয়া পরিবার বসবাস শুরু করে। সময়ের সঙ্গে এ সংখ্যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১৬ ঘরে। তবে জমির মালিকানা দাবি করে সাজ্জাদ আলী কয়েক কোটি টাকার এ জায়গা দখলের উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনটি পরিবার চলে গেলেও এখনো ১৩টি পরিবার মহল্লায় বসবাস করছে।

Manual2 Ad Code

বাসিন্দাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের পর ইন্দ্র ধুপি নামের এক ব্যক্তি তাঁদের এখানে বসবাসের অনুমতি দেন। পরবর্তীতে তিনি মারা যান। জমির ওপর সিটি করপোরেশন শৌচাগার ও নলকূপ স্থাপন করে। কিন্তু এখন সাজ্জাদ আলী দাবি করছেন, ইন্দ্র ধুপি মৃত্যুর আগে জমিটি তাঁর কাছে বিক্রি করেছিলেন।

Manual7 Ad Code

মিশ্র রাম বর্মণ, মহল্লার এক বাসিন্দা, জানান—দীর্ঘদিন ধরে চাপের মুখে আছেন তাঁরা। প্রথমে তিন মাস সময় দেওয়া হলেও তা কমিয়ে ১০ দিন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটি পরিবারকে ছয় লাখ টাকা করে দেওয়ার পর এখন ঘর ছাড়তে বলা হয়েছে।

৮০ বছরের ফুলমনি বিশ্বাস, যিনি প্রথম ছয় পরিবারের একজন, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“কোথায় যাব? আমরা তো এখুন আন্ধার ঘরে হাইতড়্যাই তো পাছি ন্যা। আন্ধার ঘরে মানুষ কিছু পায় কি না? ওই রকম আমরাও কিছু খুইজে পাছি ন্যা।”

পাড়ার আরও অনেকেই জানান, জমি ছাড়ার পর তাঁদের নতুন বাড়ি করার সামর্থ্য নেই। কেউ কেউ গ্রামের দিকে ছোট জমি কিনেছেন, তবে নির্মাণের টাকা হাতে নেই।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাজ্জাদ আলী বলেন,
“ওই জায়গা আমার কেনা। কেনার সময়ই কয়েকটা ঘর ছিল। এখন তাদের পুনর্বাসন করছি, টাকা দিয়েছি। কাউকে জোর করছি না, সুন্দরভাবে বিদায় দিচ্ছি।”

তবে এলাকার সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম একসময় সাজ্জাদের কাগজপত্রকে জাল বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Manual6 Ad Code

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারী বলেন,
“এ রকম কোনো বিষয় আমার জানা নেই। আমাকে কেউ জানায়নি। অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হলে পাহাড়িয়ারা আমার কাছে আসতে পারে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”