
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শেরেবাংলা ফজলুল হক হলে আজ শুক্রবারের ভূমিকম্পে দেয়ালে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে। এতে আতঙ্কিত আবাসিক শিক্ষার্থীরা দ্রুত স্থানান্তর ও হল পুনর্নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন।
আজ সকাল ১১টার দিকে ভূমিকম্পের পর শিক্ষার্থীরা হলের প্রধান ফটক থেকে মিছিল বের করেন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এক ঘণ্টার মতো অবস্থান শেষে কর্মসূচি শেষ হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, “ভূমিকম্পের সময় হলের একপাশে বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি সংস্কার করা অংশও আবার ফেটে গেছে। তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখন জীবনঝুঁকিতে রয়েছে। হলটি অনেক আগেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে, কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
শেরেবাংলা হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ হাসান জেমস বলেন, “১৯৬২ সালে নির্মিত এই হল এখন পুরোপুরি জরাজীর্ণ। প্রতিটি রুমে বড় ফাটল রয়েছে। রাতে ছাদ থেকে পলেস্তারা পড়ে শিক্ষার্থী আহত—এমন ঘটনাও আছে। ভূমিকম্পে আতঙ্কে অনেকে তিনতলা থেকে লাফ দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন।”
রাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “জুমার নামাজের পর যদি নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে আমরা অপেক্ষা করব না। প্রয়োজনে নিজেরাই অন্য হলে চলে যাব। বর্তমান ভবন যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।”
শেরেবাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, “ভূমিকম্পের পর আমরা পরিদর্শনে গিয়ে অসংখ্য ফাটল দেখেছি। শিক্ষার্থীরা আর নিরাপদ নন। জুমার নামাজের পর বৈঠকে দ্রুত স্থানান্তর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “হল ভবনের অবস্থা খুব খারাপ। তিনতলা ঘুরে দেখেছি—বহু জায়গায় গভীর ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়েছে। বুয়েট বা রুয়েটের বিশেষজ্ঞ এনে ঝুঁকি পরিমাপ করতে হবে। ঝুঁকি বেশি হলে শিক্ষার্থীদের দ্রুত অন্য হলে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
আজ সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে নরসিংদীর ঘোড়াশালকে কেন্দ্র করে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কম্পন অনুভূত হয়।