রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবর জামিনে মুক্ত

প্রকাশিত: ৯:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৫

রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি এসআই আকবর জামিনে মুক্ত

সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলার প্রধান আসামি বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। প্রায় ৫৭ মাস পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে গতকাল রোববার রাতে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি লাভ করেন।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে আলোচিত এ মামলার চার্জশিটভুক্ত ৬ আসামির মধ্যে চারজনই জামিনে মুক্তি লাভ করলেন।

 

 

 

 

 

বর্তমানে আসামিদের মধ্যে সহকারী উপ-পরিদর্শক আশেক (এএসআই) এলাহী কারাগারে ও সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান পলাতক রয়েছেন। আদালতের সেরেস্তাদার কৃপা সিন্দু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর ডেপুটি জেলার মনিরুল হাসান জানিয়েছেন উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত হয়ে জামিনের কাগজ রোববার তাদের কাছে পৌঁছায়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ৮টার দিকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

নগরীর আখালিয়ার বাসিন্দা যুবক রায়হান আহমদকে ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে কাষ্টঘর এলাকা থেকে ধরে নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়। ওই দিন রাতে তাকে ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হলে পরদিন সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। প্রথমে পুলিশ ছিনতাইকালে গণপিঠুনিতে রায়হান মারা যাওয়ার তথ্য প্রকাশ করে। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগে প্রেক্ষিতে মূল ঘটনা বেরিয়ে আসে। রায়হানের মৃত্যু নিয়ে দেশ বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তাহিমনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন। ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পেয়ে পুলিশ ওই সময় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটি পরে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তারা প্রথমে পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে যান। তাকে ওই বছরের ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাটের দনা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রায় ৫৭ মাস তিনি কারাগারে ছিলেন। গতকাল রোববার জামিনে মুক্তি পান। এর আগে বিভিন্ন সময় আরও চার আসামি মুক্তি লাভ করেন।

আলোচিত এ মামলার তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে আকবর ছাড়াও অভিযুক্ত করা হয় ওই সময়কার পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুন অর রশিদ, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস, এসআই হাসান উদ্দিন ও কোম্পানীগঞ্জের গণমাধ্যম কর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান। এদের মধ্যে আশেক এলাহী কারাগারে ও নোমান বর্তমানে ফ্রান্সের প্যারিস শহরে পালিয়ে রয়েছেন। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। একই বছরের ১১ মে মামলায় প্রথম সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী ও রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী। ইতোমধ্যে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ