১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত

admin
প্রকাশিত ০৯ জুলাই, বুধবার, ২০২৫ ১৭:১৮:০২
লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত

Manual1 Ad Code

গত চার দিনের টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের উপকূলের চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪-৫ ফুটের বেশি জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় মেঘনা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ অন্যান্য ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

Manual4 Ad Code

জানা গেছে, উপজেলার চরকালকিনি, চরমার্টিন, চরলরেন্স, চরফলকন, পাটারিরহাট, চরজাঙ্গালিয়া, চরকাদিরা ও তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের নিচু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জোয়ার ও বৃষ্টির পানি বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি, কাঁচা-পাকা ও  নিচু ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়ে ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অতিরিক্ত পানিতে আউশ ধান, আমনের বীজতলা ও পানের বরজ নষ্টসহ ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। হাঁস-মুরগিসহ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থ ও চাষিরা।

Manual3 Ad Code

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মেঘনা নদীর মতিরহাট থেকে রামগতি পর্যন্ত প্রায় ৩১ কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় প্রতিবছর জোয়ারের পানি ঢুকে কমলনগরের সবকটি ইউনিয়ন তলিয়ে যায়। এর জন্য লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন অনেকে। তাঁদের দাবি, কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনার কারণে কাজের ধীরগতি হওয়ায় বর্তমানে অরক্ষিত রয়েছে রামগতি-কমলনগর।

২০২৪ সালের আগস্টের মাঝামাঝি ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী অঞ্চলের সঙ্গে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কমলনগরের বিস্তৃর্ণ জনপদ। তখনকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কমলনগরের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ। সেই ক্ষত মুছতে না মুছতে আবার জনমনে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বছরের বন্যা মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবে খাল খনন শুরু হলেও সেখানে কোনো অগ্রগতি হয়নি। অবৈধ দখলের কারণে সব খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

Manual5 Ad Code

চরকালকিনি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য আবুল বাশার বলেন, ‘জোয়ারের পানি ও অতিবৃষ্টির কারণে আমাদের ইউনিয়নের সব এলাকা পানির নিচে। বর্তমানে সাধারণ মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে মানুষেরও খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে।’

Manual5 Ad Code

কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইউছুফ আলী মিঠু বলেন, বেড়িবাঁধের কাজের ধীরগতির কারণে বর্ষা মৌসুমে লোকালয়ে অতি দ্রুত পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং কমলনগরের সবকটি খাল অবৈধ দখলে। দীর্ঘদিন থেকে দখল ও খাল খনন না হওয়ায় এখন খালগুলো মৃতপ্রায়। যার কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ ছাড়া অপরিকল্পিত বসতবাড়ি নির্মাণের ফলে পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এসব বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অশনিসংকেত দেখা দিতে পারে বলে তিনি দাবি করছেন।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাহাত উজ জামান বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে চরকাদিরা ইউনিয়নের কিছু এলাকার ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। বন্যার আশঙ্কায় আমরা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করছি।’