২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

শাবিতে দিনব্যাপী চা প্রদর্শনী, চীন-বাংলাদেশের চা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা

admin
প্রকাশিত ২০ মে, মঙ্গলবার, ২০২৫ ২০:২৪:৫৩
শাবিতে দিনব্যাপী চা প্রদর্শনী, চীন-বাংলাদেশের চা-বাণিজ্যের নতুন সম্ভাবনা

Manual6 Ad Code

 

 

 

 

এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া:

 

Manual6 Ad Code

বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে চা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন চা বাগান মালিক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের অংশগ্রহণে সিলেটে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘চা প্রদর্শনী ২০২৫’। প্রদর্শনীতে আয়োজক হিসেবে ছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধীনস্থ চাইনিজ কর্নার, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগ এবং ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। এ অনুষ্ঠানে চীনের ৭সদস্যের এক প্রতিনিধি দল এই চা প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন।

 

 

Manual1 Ad Code

মঙ্গলবার (২০মে) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী।

 

 

Manual1 Ad Code

 

প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, চায়না- বাংলাদেশের মধ্যে চা-এর বিনিময়েট মাধ্যমে নতুন দিগন্ত খুলছে। এখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষণা বাংলাদেশের চা শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে এখানে আরও নতুন উদ্ভাবনের সহযোগিতা করবে। আশা করি চীন সরকার বাংলাদেশেও তাদের চা শিল্পের নতুন ধারণা শেয়ার করবে এবং নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভাবনে সহযোগিতায় পাশে থাকবে।

 

 

 

শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত চাইনিজ কর্নারের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. সাহাবুল হকের সভাপতিত্বে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশস্থ চায়না দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর লি শাওপিং। অনুষ্ঠানে লি শাওপিং বলেন, ‘বাংলাদেশে চা একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। দুই দেশের মধ্যে এই খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের সুযোগ অসীম। এই ধরনের উদ্যোগ সেই পথকে প্রশস্ত করে।’

 

 

 

বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমাইল হোসেন, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির মাওলানা খাইরুল হোসেন, শ্রীমঙ্গলের বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তাহসীন আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে চীনের চা-এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে বক্তব্য দেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফ্যুসিয়াস ইনস্টিটিউট পরিচালক ইয়াং হুই, প্রকারভেদ ও প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে চীনা শিক্ষক জং কিয়ানআন ও চা শিল্প নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক লি ইয়াংসি।

 

 

 

বাংলাদেশের চা শিল্প নিয়ে বক্তব্য রাখেন শাবিপ্রবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদ, কর্মসংস্থান ব্যাংকের পরিচালক সাংবাদিক সালাউদ্দিন বাবলু।

 

 

 

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আশরাফুর রহমান এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলারা রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবি অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন, সহকারী অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, চা উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ, চা শ্রমিক প্রমুখ।

 

Manual2 Ad Code

 

 

এসময় বক্তারা বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর ৬ দশমিক ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন চা উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে চীনে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ও বাংলাদেশে থাকে এক লাখ টন উৎপাদন হয়ে। চীন বর্তমানে প্রযুক্তির সাহায্যে চা উত্তোলন করে থাকে। এর মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়াতে তা পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে। চায়না ও বাংলাদেশের একাডেমিক, গবেষণা ও বাণিজ্যিক আলোচনার অংশ হিসেবে এই টি সামিট ও প্রদর্শনী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগ্ন উন্মোচন করবে।

 

 

 

সকাল ১০টা বিকাল বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে এসএস ব্লাক টি (২), দ্য কনসলিডেটেড টি (ফিনলে), ফিয়াজি টি, গার্ডেন ফ্রেশ টি, মাগলা টি, এম আহমেদ টি (২), ইকো ডাই, মালনীছড়া, লুস্সো বেল্লা, পদ্মা টি, ম্যাকসন ব্রাদারস, ন্যাশনাল টি সাঙ্গো, মুনা ট্রেডার্স, তালুকদার টিসহ দেশীয় ১৬টি চা বাগান ও আমদানী-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, ৩ টি চীনা প্রতিষ্ঠান ও ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের অংশ নেন।

 

 

 

অনুষ্ঠানে চীনা প্রতিনিধি দল ও সিলেটের চা বাগান কমিউনিটির নিজস্ব পরিবেশনায় সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, চীনা ভাষার অঙ্কন ও ক্যালিওগ্রাফি প্রদর্শনী, চীনের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় চা তৈরির ব্যবস্থা ইত্যাদি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথি, উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এছাড়া প্রদর্শনী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক এবং চা গবেষকদের ৮টি লেখা সম্বলিত একটি বিশেষ প্রকাশনা বের হয়েছে।

 

 

 

উল্লেখ্য, সিলেটে প্রথমবারের মতো এ চা প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে চা বাগান মালিক, উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের অংশগ্রহণের তৈরি পাশপাশি বৈশ্বিক চা বাণিজ্য ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চায়নার মধ্যে চা বাণিজ্য সম্প্রসারণে চলমান কৌশল, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।