১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শেখ হাসিনা আরেক দেশের কোলে বসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উসকানি দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেললেন

admin
প্রকাশিত ১২ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, ২০২৫ ১০:৫৪:৫১
শেখ হাসিনা আরেক দেশের কোলে বসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উসকানি দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেললেন

Manual3 Ad Code

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বলে দিতে চাই, মব জাস্টিসের কথা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন না। আমরা ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজপথে রক্ত দিয়ে আজ এ পর্যায়ে দাঁড়িয়েছি।’

Manual1 Ad Code

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলটির রাজশাহীর গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন। রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে জেলা খেলাফত মজলিস।

মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা করুণার পাত্র নই। যদি আমাদের করুণার পাত্র মনে করে থাকেন, ওপেন চ্যালেঞ্জ দিলাম। আসুন, আমাদের মোকাবিলা করে দেখুন। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলি, এ দেশে আমরা ইসলাম নিয়ে বাঁচব। ইসলামের গৌরব নিয়ে বাঁচব।’

ইসলামের বিপক্ষের শক্তিই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি উল্লেখ করে হেফাজতের এই নেতা বলেন, ‘২৫০ বছরের ইতিহাস প্রমাণ করে বাংলাদেশ এবং ইসলাম এক সূত্রে গাঁথা। যদি দেশে ইসলাম না থাকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে। যারা ইসলামকে সহ্য করতে পারে না, তারাই স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি।’

Manual8 Ad Code

নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, ‘নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের প্রতি যারা পিরিত দেখাও মনে রেখো, এ দেশের মানুষ সহনশীল, কিন্তু দুর্বল নয়। শেখ হাসিনার গোড়া যেখানে, তসলিমা নাসরিনের গোড়াও সেখানে। তসলিমা নাসরিন আবার নতুন করে বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছেন।’

Manual1 Ad Code

খেলাফত মজলিসের আমির বলেন, ‘১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তা ভিনদেশি একটি শক্তি ছিনতাই করার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশে কোনো দল এ দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার দাবি করেনি। কিন্তু আমরা দেখলাম, শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতা ঘোষণা করে প্রকৃতপক্ষে বাহাত্তর সালেই বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বলি দিয়েছিলেন। এভাবে বাহাত্তরে একটি চেতনা দাঁড় করানো হয়েছে। সেই বাহাত্তরের চেতনাকেই একাত্তরের চেতনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। কিন্তু একাত্তরের চেতনা ছিল মুক্তির চেতনা। বাহাত্তরের চেতনা ছিল গোলামির চেতনা। বিগত ৫৩ বছর সেই দালালির চেতনাকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা হয়েছে। সেই চেতনায় বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত তিন বছরেই ৩০ হাজার মায়ের বুক খালি করা হয়েছে। আর তাই ক্ষোভ থেকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের মতো ঘটনা বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছিল।’

মামুনুল বলেন, ‘মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তিনি প্রতিশোধ নেবেন। যে দেশের মানুষ তার বাবাকে হত্যা করেছে, তিনি সেই প্রতিশোধ নেবেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা রাজনীতিতে ফিরলেন। তার মূলনীতি ছিল দুটি—বিভাজন আর ষড়যন্ত্র। তিনি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি প্রতিশোধ নিয়েছেন। প্রতিশোধ গ্রহণ করেছেন তার দল আওয়ামী লীগ থেকেও।’

ধর্মীয় এই নেতা বলেন, ‘অনেকেই আশ্চর্য হবেন, তিনি আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কীভাবে প্রতিশোধ নিলেন। চিন্তা করলে দেখবেন, তিনি আওয়ামী লীগের কত বড় ক্ষতি করে গিয়েছেন। বিগত ১৫ বছরে অক্ষরে অক্ষরে তিনি এমন এক জায়গায় আওয়ামী লীগকে নিয়ে গেছেন, মানুষ আর আওয়ামী লীগের নাম মুখে উচ্চারণ করবে না। তিনি এমনভাবে আওয়ামী লীগকে ডুবিয়েছেন, কোনো আত্মমর্যাদাশীল মানুষ আর আওয়ামী লীগ করতে পারে না।’

মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেননি। তাঁর নেতা-কর্মীদের বিপদে ফেলে তিনি পালিয়েছেন। দেশের অবস্থা সম্পর্কে হাসিনার কাছে সব তথ্য ছিল। এসব থাকার পরও তিনি ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় নেতা-কর্মীদের জনগণের বুকে গুলি ছোড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণের মুখোমুখি তাদের দাঁড় করিয়ে দিয়ে নিজে লাগেজ গুছিয়েছেন। তারপর হেলিকপ্টার নিয়ে তিনি চম্পট দিয়েছেন।’

Manual7 Ad Code

সাম্প্রতিক উত্তেজনার জন্য শেখ হাসিনাকেই দায়ী করে মামুনুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা আরেক দেশের কোলে বসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উসকানি দিয়ে মানুষকে বিপদে ফেললেন। নতুন করে মানুষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলো এবং কিছু মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হলো। এর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রাজশাহী জেলা শাখার আহ্বায়ক মুফতি মুহাম্মদ আবুল বাশার। সমাবেশে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীনসহ অন্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।