
গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় শোষণ ও বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
আজ রোববার রাজধানীর বিএমএ মিলনায়তনে দলের ত্রয়োদশ কংগ্রেসের তৃতীয় দিনের কাউন্সিল অধিবেশনে গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে এ আহ্বান জানানো হয়। সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ জানান, প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ও মধ্যবিত্তসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি বিকল্প ক্ষমতার কেন্দ্র গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, লুটেরা শাসকশ্রেণিকে পরাজিত করে রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক-সামাজিক নীতির মৌলিক পরিবর্তন না ঘটলে মুক্তিযুদ্ধ ও গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। এর জন্য সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনকে সর্বদা মূল কাজ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
রাজনৈতিক প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার আলোকে গণমুখী, প্রগতিশীল, জাতীয় স্বার্থের অনুকূল, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও বিপ্লবী ধারার বিকল্প কর্মসূচি উত্থাপন ও জনপ্রিয় করার তাগিদ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা, ফ্যাসিবাদী প্রবণতা, গণতান্ত্রিক অধিকার সংকোচন ও জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার প্রচেষ্টাকে গুরুতর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে এসবের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রামে সিপিবিকে নেতৃত্বের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, রুটি-রুজি, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের দাবিতে পুঁজিবাদের শোষণ, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সংগঠিত করে তীব্র গণসংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। সমাজকে বিপ্লবের পথে এগিয়ে নিতে গুণগত ও পরিমাণগতভাবে শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলার বিকল্প নেই বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
১৯ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেসে রাজনৈতিক প্রস্তাবের ওপর সারা দেশের ৪৫ জন প্রতিনিধি আলোচনা করেন এবং পরবর্তীতে তা অনুমোদিত হয়। আগামীকাল সোমবার গঠনতন্ত্র সংশোধনসহ বিভিন্ন রিপোর্ট অনুমোদনের পর কন্ট্রোল কমিশন, কেন্দ্রীয় কমিটি ও জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।