
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সাম্প্রতিক সময়ে সাইপ্রাসে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ শিশু শিবিরকে ঘিরে আলোচনার জন্ম দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। সোমবার (১৩ অক্টোবর) প্রকাশিত তাদের পডকাস্টটির শিরোনাম—“ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি শিশুরা বন্ধুত্ব গড়ার চেষ্টা করছে”। এটি এখন এক মূল্যবান অনুসন্ধানে পরিণত হয়েছে।
‘প্যারেন্ট সার্কেল ফ্যামিলিস’ নামে একটি সংস্থা আয়োজন করেছিল এই শিবিরের। এর লক্ষ্য ছিল—দীর্ঘদিনের সংঘাত ও ক্ষতির ছায়ায় বেড়ে ওঠা ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি পরিবারের সন্তানদের মধ্যে সংলাপ, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহমর্মিতা গড়ে তোলা।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদক নাতালি টেনা জানান, রাজনৈতিক ও মানবিক সংকটের পটভূমিতে এমন উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত সাহসী ও চ্যালেঞ্জিং। শিবিরে অংশ নেওয়া কিশোরদের অনেকেই যুদ্ধ, দাঙ্গা, অপসারণ ও স্বজন হারানোর মতো অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। তাদের নিজেদের গল্প বলার, অন্যদের কথা শোনার এবং বোঝাপড়া তৈরি করার সুযোগ দেওয়া হয় এখানে।
বিভিন্ন কর্মশালা ও আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি কিশোররা নিজেদের মধ্যে মিল খুঁজে পেতে শুরু করে। পডকাস্টে কিছু আবেগঘন বাক্য উদ্ধৃত হয়েছে, যেমন—“আমি তোমার দুঃখ শুনতে চাই”, “আমি তোমার মধ্যে নিজের কিছুটা দেখি”, “আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”
একজন ফিলিস্তিনি মেয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন নাতালি টেনা—
“আমি কখনো ভাবিনি, তার মতো একজন ইসরায়েলি বন্ধুকে আমি এভাবে হাসাতে পারব।”
গাজার সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগের দীর্ঘস্থায়িত্ব এখনো অনিশ্চিত। তবে প্রতিবেদক টেনা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন—এ ধরনের প্রচেষ্টা হয়তো নতুন প্রজন্মের জন্য শান্তি ও বোঝাপড়ার এক নতুন দিকনির্দেশ হয়ে উঠতে পারে।
আজকের বিভক্ত বিশ্বে এই শিবিরের বার্তা স্পষ্ট—মানবিক দূরত্ব কমানোই শান্তির সূচনা।