২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটের ফুটপাত দখল বানিজ্যে ‘সাব্বির—মিজান বেপরোয়া’ 

admin
প্রকাশিত ১৪ এপ্রিল, সোমবার, ২০২৫ ১৮:২৮:১০
সিলেটের ফুটপাত দখল বানিজ্যে ‘সাব্বির—মিজান বেপরোয়া’ 

Manual8 Ad Code

সিলেটের ফুটপাত দখল বানিজ্যে ‘সাব্বির—মিজান বেপরোয়া’ 

 

 

ক্রাইম প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর ফুটপাত দখলে বানিজ্যে ২৭ টি সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সিলেট নগরীর ব্যস্ততম বন্দরবাজার এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে ফুটপাত দখল বানিজ্য সিন্ডিকেটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কারা জড়িত একে একে তাদের নাম বেড়িয়ে আসে। এর মধ্যে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সাব্বির আহমদ ও মিজান অন্যতম। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সিলেট নগরীর ফুটপাত দখল বানিজ্যে আর বন্ধ হয়না।

বিগত সরকারের সময় আরিফুল হক চৌধুরী যখন সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) এর মেয়র ছিলেন তখন তিনি এই নগরীর নাগরিকদের সমস্যা সমাধানে ফুটপাত থেকে হকার্স উচ্ছেদে বিভিন্ন ভূমিকা পালন করে কিছুটা সফল হন। পরবর্তীতে শেখ হাসিনার আমলে বিএনপি সকল নির্বাচন বয়কটের ডাক দিলে প্রভাবশালী এই বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী সিসিক নির্বাচনে আর মেয়র পদে প্রার্থী হননি।

Manual6 Ad Code

 

পরবর্তিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিপুল ভোটে সিসিক এর মেয়র নিবার্চিত হয়ে ফুটপাত থেকে হকার্স উচ্ছেদে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এর সহযোগিতায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে নগরীর লালদিঘির পারে অস্থায়ী মার্কেট বানিয়ে তাদের পুর্নবাসনে একরকম সফল হন। যার স্তৃতি এখনো বিদ্যমান আছে। কিন্তু সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরও কেন তারা ফুটপাত দখল করে একদিকে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় অন্যদিকে স্থায়ী ব্যবসায়ীদের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে সেই প্রশ্ন জনমনে! আসলে ওরা কি চায়?
রমজানের আগে হকার উচ্ছেদে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেও কেন তাদের উচ্ছেদ করা যাচ্ছেনা। কার স্বার্থে পবিএ সুন্দর শান্ত নগরী সিলেটকে বিশৃঙ্খল নগরীতে রুপান্তর করা হয়েছে সেই প্রশ্ন পর্যটক ও প্রবাসীদের!

সাধারণ আনজনতা বলে সাবেক দুই মেয়রের বদান্যতায় সিলেট নগরীর নাগরিকরা যানবাহন চলাচলসহ ফুটপাতে চলাফেরা করতে তখন কোন অসুবিধা হয়নি, এখন কেন আবার বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলো। গুটি কয়েক রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা ও হলুদ সাংবাদিকের বখরার খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

 

৫ আগস্ট বৈষম্য—বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ৮ আগস্ট অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নতুন সরকারের আগমনের পর বিগত সরকারের সব কিছু ওলট—পালট হয়ে যায় । পরবর্তীতে নতুন সরকারের প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগে সিলেট নগরীর ফুটপাত চলে যায় বিএনপির দখলে” বর্তমানে ফুটপাত দখল বানিজ্যে ২৭টি সিন্ডিকেট” জড়িত বলে সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র তা নিশ্চিত করেছে।

Manual4 Ad Code

 

রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাত আনুমানিক ৮টায় সংবাদ কর্মীদের একটি প্রতিনিধি দল সিলেট নগরীর বন্দরবাজারে ফুটপাত দখল বাণিজ্যের তথ্য অনুসন্ধানে গেলে বেড়িয়ে আসে ২টি সিন্ডিকেটের নাম! একটি সিন্ডিকেট জিন্দাবাজার টু চৌহাট্টার একাংশের এই ফুটপাত দখল বানিজ্য নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ করছেন জনৈক মিজান। তার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তিনি নগরীর কাজী ইলিয়াস এলাকায় একটি ফ্লাট বাড়ি নিয়ে বসবাস করছেন। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা বিধান সাহার নামে অত্র এলাকায় ফুটপাত দখল বাণিজ্যে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন।

অপর আরেকটি সিন্ডিকেটের দখল বাণিজ্যে জড়িত আছেন সাব্বির আহমদ নামে একজন। মধুবন মার্কেটের সামন থেকে রংমহল টাওয়ার পর্যন্ত ফুটপাত দখল বাণিজ্যে নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ করছে সে। সাব্বিরের বাড়ি কুমিল্লায়। সিলেটের চারাদিঘীরপাড় এলাকায় সে বসবাস করছে।

Manual3 Ad Code

 

এদিকে, সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে জনৈক সাব্বির আহমদ বর্তমানে বিএনপির নামে ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে চাঁদা হিসেবে টাকা আদায় করছে। জানা গেছে, ফুটপাত দখল বানিজ্যে সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য সাব্বির আহমদ প্রতিটি হকার ফুটপাতে বসা বাবত অফেরতযোগ্য হিসাবে তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করছে। আর প্রতিদিন হিসেবে আদায় করছে ১০০ টাকা করে। বিগত সরকারের আমলেও এই সাব্বির দখল বাণিজ্যে শ্রমিকলীগের আব্দুর রকিবের সেল্টারে কাজ করে গেছে।

 

Manual7 Ad Code

সাব্বিরের বিরুদ্ধে দখল বাণিজ্যের অভিযোগ পেয়ে তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সে এই প্রতিবেদককে জানায়, আমি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এর একজন সাংবাদিককে প্রতি সপ্তাহে ৫০০০ টাকা দেই আর সেই সাংবাদিক অন্যান্য সাংবাদিকদেরকে ম্যানেজ করেন। যাতে গণমাধ্যমে কোনো সংবাদ আমার নামে না আসে। সে শুধু ওই সাংবাদিককে টাকা দেননি, তিনি পুলিশের টি.আই কে প্রতিদিন ১০০০ টাকা, সিটি কর্পোরেশনের জনৈক ব্যাক্তির হাতে প্রতি সপ্তাহে ১০০০ টাকা এবং বিএনপির জনৈক নেতাকে প্রতিদিন ১০০০ টাকা প্রদান করে লাইন ঠিক রেখেছেন। (চলবে)