১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটে তমদ্দুন মজলিশ কর্তৃক মওলানা ভাসানীর ১৪৬তম জন্মদিন পালন

admin
প্রকাশিত ১৪ ডিসেম্বর, রবিবার, ২০২৫ ২০:৪৪:৫৭
সিলেটে তমদ্দুন মজলিশ কর্তৃক মওলানা ভাসানীর ১৪৬তম জন্মদিন পালন

Manual3 Ad Code

কামাল খান গত  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, মহান নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জন্মদিবস উপলক্ষে তমদ্দুন মজলিস সিলেট বিভাগীয় ও জেলা শাখার উদ্যোগে মেট্রোপলিটন ল’ কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় শাখার সভাপতি প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল (অব.) এম আতাউর রহমান পীর।

Manual3 Ad Code

 

 

কবি কামাল আহমদের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক ও অধ্যক্ষ মসউদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্বজনাব কবি, সাহিত্য সমালোচক প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ ও রেজাউল হক। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মওলানা ভাসানী পরিণত বয়সে “মজলুম জননেতা” হিসেবে বাঙালি জাতির আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনে তাঁর ঐতিহাসিক ভূমিকা, পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থার বৈষম্য সম্পর্কে তাঁর সুদূরদর্শী উপলব্ধি এবং ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে তাঁর উচ্চারিত ‘আসসালামু আলাইকুম’ স্লোগান এ অঞ্চলের রাজনৈতিক চেতনায় যুগান্তকারী প্রভাব ফেলে।

 

 

Manual8 Ad Code

 

Manual5 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

তিনি আরও বলেন, মওলানা ভাসানীর রাজনীতি ছিল সম্পূর্ণ মানবমুখী এবং নিপীড়িত মানুষের মুক্তির পক্ষে দৃঢ় অবস্থাননির্ভর। তিনি পবিত্র কুরআনের সেই আয়াত— “তোমাদের কী হলো যে তোমরা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করছ না অসহায় নরনারী ও শিশুদের জন্য, যারা বলে— হে আমাদের রব! এই জালিম অধিবাসীদের জনপদ থেকে আমাদের মুক্তি দাও; তোমার পক্ষ থেকে আমাদের একজন অভিভাবক দাও, একজন সহায় দাও”— এর আলোকে তাঁর জীবনব্যাপী সংগ্রাম পরিচালনা করেছেন। জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার এবং জুলুমের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন আপোসহীন ছিলেন। তিনি আরও বলেন, মওলানা ভাসানী বিশ্বাস করতেন ‘রবুবিয়াত বা পালনবাদের ভিত্তিতে’ রাষ্ট্রীয় সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব এবং একমাত্র রবুবিয়াতের আদর্শই মানুষে মানুষে প্রকৃত ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সভায় তমদ্দুন মজলিস সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি ড. মো. তুতিউর রহমান বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, স্বাধীনতা-চেতনার প্রেরণাদাতা এবং আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর মানবিকতা, সংগ্রামী জীবন ও সাহসী নেতৃত্ব তরুণ সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল (অব.) এম আতাউর রহমান পীর বলেন, “মওলানা ভাসানী শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি ছিলেন একজন সত্যিকারের সমাজসংস্কারক।

 

 

তিনি গ্রামীণ জনপদের গরিব-দুঃখী মানুষের কল্যাণে নিজের ব্যক্তিজীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করেছিলেন। আজকের বাংলাদেশে বৈষম্য, দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে ভাসানীর চিন্তা-চেতনা আমাদের স্পষ্ট পথনির্দেশনা দেয়।” তিনি আরও বলেন, “ভাসানীর রাজনীতি ছিল জনকল্যাণনির্ভর। তাঁর আদর্শ রক্ষা করার অর্থ হচ্ছে সত্য, ন্যায়, সাহস ও মানবিকতার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করা।” কবি ও সাংবাদিক হেলাল নির্ঝরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ নেছারুল হক চৌধুরী বুস্তান, তাওফিক আহমদ চৌধুরী, সমাজকর্মী সৈয়দ রেজাউল হক, লেখক-প্রকাশক ও সংগঠক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল, সাংবাদিক লুৎফুর চৌধুরী, কবি এখলাছুর রহমান, নাগরিক গবেষক মফিক আহমদ, সংগঠক বদর চৌধুরী, প্রভাষক আখলাকুল আসপিয়া, কবি আয়েশা মুন্নী, গল্পকার তাসলিমা খানম বীথি প্রমুখ। বক্তারা মওলানা ভাসানীর আদর্শ বাস্তবায়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং অসহায় মানুষের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।