জীবনভর সংবাদপত্রে কাজ করে শেষ জীবনে প্রতিষ্ঠান থেকে শূন্যহাতে ফিরতে হয়,তাই সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে
#এখন প্রেস কাউন্সিলের৷ বোর্ডে ১৫ সদস্যের মধ্যে ৯ জন সাংবাদিক প্রতিনিধি #
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া;
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম বলেছেন,
জীবনভর সংবাদপত্রে কাজ করেও শেষ জীবনে নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে শূন্যহাতে ফিরতে হয়।তাই সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়নে কাজ চলছে।
সাংবাদিকদের কারো কারো বেলায় দেখা যায় কোনো নিয়োগ পত্রই নেই এবং কেউ কেউ বিনা বেতনে কাজ করে জীবন পার করে দেন। দেশে এমন পরিস্থিতি থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের আর্থিক সুরক্ষার খুব দরকার। প্রেস কাউন্সিল এ ব্যাপারে সরকারকে
সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। এই প্রস্তাবনা নীতিমালা হিসেবে শিগগিরই প্রণীত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাংবাদিকদের,সংবাদপত্র মালিকদের এবং সম্পাদকদের নানা সংগঠন থাকলেও তাদের সাধারণ সাংবাদিকদের জন্য তেমন কোনো আর্থিক উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাতে দেখা যায় না। দেশে প্রায় ৩ হাজার আইন রয়েছে।বহু সংখ্যক আদালত রয়েছে। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়নের জন্য যোগ্য ও দক্ষ মানুষের খুব অভাব রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রফেসনাল ও পলিটিকাল আইডেন্টিটি আলাদা থাকা উচিত। দুটোকে মিলানো যাবে না।
বিচারপতি একেএম আবদুল হাকিম বুধবার দুপুরে সিলেটে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষ সনদপত্র বিতরণ কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
“গণমাধ্যমের অপ-সাংবাদিকতা
প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ” শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায়
সিলেটের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রায় ৪০জন সাংবাদিক অংশ নেন।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের উদ্যােগে এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আয়োজিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মাসন সিংহ।
সিলেট সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব ( উপ-সচিব) আবদুস সবুর।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ রেজাউল করিম পিপিএম-সেবা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা তথ্য অফিসের পরিচালক মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন।
কর্মশালায় বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা চর্চায় প্রেস কাউন্সিল এক্ট-১৯৭৪ এর প্রয়োগ বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন।
এসময় তিনি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের উপর গুরুত্বারোপ করে সাংবাদিকতার মত মহান ও গুরুত্বপূর্ণ পেশায় দায়িত্ব পালনকালে সততা ও নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত না হওয়ার আহ্বান জানান সাংবাদিকদের।
দেশকে ভালোবেসে সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের আহবানে জানান তিনি।
এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন এবং সেগুলো দূরীকরণে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এখন আর ‘দন্তবিহীন বাঘ’ কিংবা ‘ঠুটো জগন্নাথ ‘ নয় উল্লেখ করে রাস্ট্রীয় এই সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, এটা ক্রমাগত ভবিষ্যতের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
এছাড়া কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর “বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে প্রেস কাউন্সিল প্রণীত আচরণবিধি প্রতিপালনের গুরুত্ব” বিষয়ে একটি সেশন পরিচালনা করেন।
এসময় তিনি জানান, বহুদিন পর সম্প্রতি প্রেস কাউন্সিলের ১৫ সদস্যের বোর্ড গঠিত হয়েছে। এতে ৯ জন সাংবাদিক প্রতিনিধি রয়েছেন।
কর্মশালায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও ডেইলি ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস এর সিলেট প্রতিনিধি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট ব্যুরো চিফ আবদুল কাদের তাপাদার, দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবির আহমদ সোহেল, দৈনিক আলোকিত সিলেট এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক গোলজার আহমদ হেলাল, দৈনিক দিনকাল এর সিলেট প্রতিনিধি সাইফুর রহমান তালুকদার, নিউ এজ প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান,দৈনিক সিলেটের ডাক এর সিনিয়র রিপোর্টার কাউসার চৌধুরী ও একাত্তর টিভির সিলেট প্রতিনিধি মিটুসহ সিলেটের স্থানীয় দৈনিক, জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি ও টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিনিধিরা।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকবৃন্দের মাঝে সনদ বিতরণ করেন।