সিলেট ২৮শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২৪
সিলেট বাস টার্মিনালের সেই জুয়ার দুটি আসর আজও বন্ধ হয়নি
স্টাফ রির্পোটার:- সিলেট মহানগর পুলিশের গোয়েন্ধা পুলিশ (ডিবি)ও অভিযানে সিলেট নগরীর সব কয়টি জুয়ার আস্তানা বন্ধ হয়ে গেছে। সরাসরি সেই সব অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডিবির ডিসি তাইয়াত আহমদ চৌধুরী, এ ডিসি শাহরিয়ার আল মামুন। বিভিন্ন জুয়ার স্পটে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে জুয়ার আস্তানা দিয়েছেন গুড়িয়ে। পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিন জোনের ডিসিদ্বয়ের নির্দেশে থানা পুলিশও নিজ-নিজ এলাকায় সব কয়টি জুয়ার আস্তানা বন্ধ রাখতে কমিশনারের নির্দেশে তৎপর রয়েছেন।
কিন্তু এসএমপির এ সকল কর্মকর্তাকে এক রকম চ্যালেঞ্জ করে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জরুরি অবস্থার মধ্যেও চলছে বিশাল দুটি জুয়ার আসর। সিলেট নগরীর কদমতলী বাসটার্মিনালের যমুনা মার্কেটের পাশেই গুডলিংক বাস কাউন্টারের পিছনের স্থানীয় পাপ্পু মিয়া একটি বিল্ডিংয়ে প্রতিদিন বিকাল ২টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত চলে সেই জুয়ার আসর গুলো। এই জুয়ার একটি বোর্ডের মালিক একাধিক মামলার তালিকাভুক্ত আসামী রাজন উরফে রাজন মোল্লা, দক্ষিণ সুরমা এলাকার প্রসিদ্ধ জুয়াড়ী আল আমিন ও মিতালী বাস শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। জুয়ার আসরগুলো টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মাত্র ১শ গজ দুরত্বে। বিরামহীন ভাবে রাত দিন চললেও এ নিয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি, কিংবা টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির আইসি দিবাংশু পালের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভুলেও এসব জুয়ার আসরে অভিযান চালায় না পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন জানান, এই জুয়ার আসরে থানা কিংবা ডিবি পুলিশ কোন রকম অভিযান চালায় না অদৃশ্য কারনে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বিঘ্নে জুয়া খেলার জন্য আসতে থাকেন নানা শ্রেনী পেশার মানুষজন। শুধু জুয়া নয় সেখানে রাজনের নেতৃত্বে প্রকাশ্য বিক্রি করা হয় মাদক দ্রব্য।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির আইসি দিবাংশু পালকে প্রতিদিন এই জুয়ার আসর থেকে রাজন মোল্লার মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা দেওয়া হয়ে থাকে। রাজন মোল্লাই প্রশাসনিক দিকটি সামাল দেন।
পাশাপাশি শ্রমিকদের সামাল দিতে এবং কোন রকম পুলিশি অভিযান হলে যাতে শ্রমিক এসে অভিযানে বাধা প্রদান করে সেই জন্য শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়াকে প্রতিদিন ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয় বলে সূত্র নিশ্চিত করে। শ্রমিকদের মাথা বিক্রি করে শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া নিজের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন এই দুটি জুয়ার আসর থেকে।
এর আগে উক্ত এলাকায় একটি জুয়ার আসর বন্ধ করতে গিয়ে হেনাস্তার শিকার হয় ডিবি পুলিশের একটি অভিযানিক টিম। এরপর থেকে এই এলাকায় কোন জুয়ার আসরে চালানো হয়না অভিযান। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজন মোল্লা, আল আমিন,রাজু ও আলঙ্গীর জুয়ার, আস্তানাগুলো গড়ে তুলে। আর তাদের সব রকম শেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক নেতা সেলিম মিয়া। জুয়ার আস্তানাগুলো শ্রমিকদের এলাকায় হওয়ায় সহজে অভিযান চালায় না আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে নির্বিগ্নেই চলছে তাদের বিশাল সেই জুয়ার আসর। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে রাজন মোল্লা ও আল আমিন বলেন, এখানে শ্রমিকরা জুয়া খেলে শ্রমিকনেতা সেলিম ভাই খেলার ব্যবস্থা করে দিছেন। এখান্ পুলিশ, ডিবি ম্যানেজ করে আমরা বোর্ড চালাই, লিখে কোন লাভ হবেনা। কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস র্টামিনালে দীর্ঘ দিন ধরে এই দুটি জুয়ার বোর্ড চলছে । জুয়ার বোর্ড দুটি মানুষ দিয়ে পরিচালনা করছেন মিতালি পরিবহন শাখার চেয়ারম্যান সেলিম মিয়া এমন অভিযোগ স্থানীয় শ্রমিকদের।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, টার্মিনালে দুটি জুয়ার বোর্ডের একটি মালিক রাজন ও আল-আমিন। অন্যটির মালিক রাজু ও আলঙ্গীর। এই চারজনই দুটি জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিদিন নাকি এই চারজন জুয়াড়ী মিতালি চেয়াম্যান সেলিম মিয়া ২০ হাজার টাকা করে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে থাকেন। জুয়ার বোর্ডের পরিচালকদের দাবী তারা মালিক সমিতিকে প্রতিদিন ২০হাজার টাকা ও শ্রমিক সমিতিকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে থাকেন। অপরদিকে কদমতলি পুলিশ ফাঁড়িকে প্রতিদিন দেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা। দক্ষিণ সুরমা থানার কথা বলে আরও ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয় এই দুটি জুয়ার আসর থেকে। এছাড়া মহানগর ডিবি পুলিশের কথা বলে জুয়ার আসর থেকে নেওয়া হয় আরো ২০ হাজার টাকা। এ বিষয়ে জানতে দক্ষিন সুরমা থানার ওসি ইয়াদৌসের ব্যবহৃত সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ডিসি দক্ষিন মো: সোহেল রোজা (অতিরিক্ত ডিআইজি) বলেন, আমি এখনই বিষয়টির খবর নিচ্ছি, এরকম কোন স্পট থাকলে এখনই অভিযান পরিচালিত হবে, আমার কোন এলাকায় কোন রকম জুয়া সহ অপরাধ মূলক কাজ করতে দেওয়া হবেনা।
যদিও সিলেট নগরীর সব কয়টি জুয়ার বোর্ড একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে ডিবি পুলিশ, কমিশনারের রয়েছে কঠুর নির্দেশনা কিন্তু কি করে টার্মিনাল ফাঁড়ির এতো কাছে এই জুয়ার আসরটি চলছে এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
স্থানীয় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ নাম না প্রকাশ করা শর্তে চলমান এই পরিস্তিতে জুয়ার বোর্ড গুলো বন্ধ করতে এসএমপি কমিশনারের হস্থক্ষেপ কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা: বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক,
উপদেষ্টা : খান সেলিম রহমান, জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকা, ঢাকা ।
উপদেষ্টা : মোহাম্মদ হানিফ,
প্রকাশক : মোঃ ফয়ছল কাদির,
সম্পাদক : মাছুম কাদির,
সিলেট অফিস : রংমহল টাওয়ার(৪র্থ তলা) বন্দরবাজার সিলেট,৩১০০। মোবাইল নং-০১৭১৮৬২০২৯১,
ই-মেইল : Foysolkadir503@gmail.com,
Design and developed by DHAKA-HOST-BD