সুরমায় ফ্যাসিস্টদের বালু হরিলুট
নেপথ্যে ডেভিল আফতাব
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসররা লুটেপুটে খাচ্ছে সিলেটের সুরমা নদী। ফলে ভয়াবহ ভঙ্গনের মুখে নদীর উভয় তীর। তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, কৃষিজমি, পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধসহ সরকারি বেসরকারিবিভিন্ন স্থাপনা। ফলে জেলার কানাইঘাট ও জকিগন্জের মানুষজন নদীভাঙ্গনের ভয়ে আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন।
জানা গেছে, সিলেট মেট্টোপলিটন শাহপরাণ থানাধীন মেজরটিলা নিবাসী মোঃ আফতাব উদ্দিন ওরফে বালু আফতাব ওরফে ড্রজার আফতাব ওরফে কার্পেট আফতাব একজন অবৈধ বালুখেকো ও আওয়ামী ডেভিল। জুলাই আন্দলনের একটি বিস্ফোরক মামলার পলাতক আসামী তিনি। ওই আফতাব স্বৈরাচার আওয়ামী আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার ছেলে তারেক এর নামে একটি ইজারা লাইসেন্স সংগ্রহ করেন। এই লাইসেন্স দিয়ে জকিগন্জ উপজেলাধীন নওয়াগাও মৌজায় সুরমা নদীর নামেমাত্র আড়াই একরের একটি মহাল ইজারা নেন। আর এই ইজারা মূলে আফতাব ও তার সহযোগী দোসর তারেক মোহাম্মদ আদুল্লাহ, মিজানুর রহমান ডিপজলসহ কয়েকজন মিলে সুরমা নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা লুটেপুটে খেতে শুরু করেছেন। তারা জেলার কানাইঘাট উপজেলার কায়স্তগ্রাম থেকে শুরু করে বড়দেশ বাজার পর্যন্ত সুরমা নদীতে শতাধিক একর এলাকাজুড়ে চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশ বিধ্বংসী তাণ্ডব।
প্রতিদিন ২০/২৫ টি নিষিদ্ধ ঘোষিত সাকশান ড্রেজার ও বাল্কহেড দিয়ে নদীর উভয় তীর খোদাই করে বালু উত্তোলন করছেন। কোটি কোটি ঘনফুট বালুমাটি বিক্রি করে হাজার কোটি টাকা কামাই করছেন। আর এই টাকা মানিলন্ডারিং করে ভারতসহ বিভিন্নদেশে পলাতক থাকা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী নেতাদের অর্থায়ন করছেন।
চলতি বছরের মে মাস থেকে তান্ডব চালানো আফতাব ও ডিপজল বাহিনীর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন কানাইঘাট ও জকিগন্জ উপজেলাদ্বয়ের সুরমা তীরের বাসিন্ধারা। ডেভিল আফতা বাহিনীর বালুকাণ্ড ও তান্ডবের বিরুদ্ধে তারা একাধিকবার সিলেটের জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও সিলেট রেন্জের ডিআইজি বরাবরে একাধিকবার স্মারকলিপিও দেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোনোরূপ প্রতিকার পাননি। উল্টো আফতাব বাহিনীর হামলায় প্রতিবাদী ১৫জন আহত হন। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এছাড়াও আফতাব বাহিনীর দেওয়া মিথ্যা মামলায় হয়রানীর শিকারও হয়েছেন অনেক।
জানা গেছে, সাদাপাথর কাণ্ডের পর সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক জেলার সর্বত্র অবৈধ বালু-পথর উত্তোলন বিক্রয় ও বিপননে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন। কিন্তু ডেভিল আফতাব ও তার লুটেরা বাহিনী এ নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কা না করেই সুরমার বালু-মাটি লুটপাট অব্যাহত রেখেছে।
আরো জানা যায়, ডেভিল মোঃ আফতাব ওরফে বালু আফতাব ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে দায়ের করা একটি বিস্ফোরক মামলার ১৭৪নং এজাহার নামীয় পলাতক আসামী। যা’ এসএমপির কোতোয়ালি থানার মামলা নং-০৬/২৭১ তাং-০৫/০৬/২০২৫।
মামলায় পলাতক থেকেও আফতাব বীরদর্পে সুরমায় চালিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ বিধ্বংসী তান্ডব। অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাকে ধরছে না বলে অভিযেগে প্রকাশ।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ সারওয়ার আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ইতোমধ্যে সিলেট জেলায় বালু ও পাথর উত্তোলন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রয় সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপর ও কেউ যদি আদেশ অমান্য করে অবৈধ ভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন ও বিক্রয় করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।