হান্টিংটন রোগের জন্য প্রথম সফল জিন থেরাপি চালু

প্রকাশিত: ১০:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫

হান্টিংটন রোগের জন্য প্রথম সফল জিন থেরাপি চালু

বিশ্বের অন্যতম ধ্বংসাত্মক স্নায়বিক অসুখ হান্টিংটন রোগের জন্য প্রথমবারের মতো সফল চিকিৎসার ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এটি বংশানুক্রমিক রোগ, যা মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে এবং ডিমেনশিয়া, পারকিনসন ও মোটর নিউরন রোগের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) হান্টিংটন ডিজিজ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর সারা তাবরিজি জানিয়েছেন, নতুন জিন থেরাপি রোগটির অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ধীর করেছে। এর ফলে রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত এক বছরে যে অবনতি ঘটে, চিকিৎসার পর সেটি হতে চার বছর লাগবে। রোগীরা দীর্ঘসময় ভালো মানের জীবনযাপন করতে পারবেন।

থেরাপিটি প্রয়োগ করতে ১২–১৮ ঘণ্টা দীর্ঘ জটিল মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করতে হয়। নিরাপদ একটি ভাইরাসের মাধ্যমে বিশেষ ডিএনএ রোগীর মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে প্রবেশ করানো হয়। ডিএনএ কোষকে এমনভাবে পরিবর্তন করে যে ক্ষতিকর হান্টিংটিন প্রোটিন তৈরির প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়, ফলে স্নায়ুকোষ ধ্বংস থেকে রক্ষা পায়।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলক চিকিৎসায় ২৯ জন অংশগ্রহণ করেন। তিন বছর পরও রোগের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ ধীর হয়েছে। রোগীর বুদ্ধিবৃত্তি, চলাফেরা এবং দৈনন্দিন কার্যক্ষমতায় ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ হুইলচেয়ারের প্রয়োজন এড়াতে পারছেন, আবার কেউ আবার কাজেও ফিরেছেন।

হান্টিংটন রোগ সাধারণত ৩০–৪০-এর দশকে ধরা পড়ে এবং ২০ বছরের মধ্যে মৃত্যু ডেকে আনে। গবেষকরা আশা করছেন, আগেই চিকিৎসা শুরু করলে উপসর্গ প্রতিরোধ সম্ভব। প্রফেসর তাবরিজি বলেন, “এটি কেবল শুরু। আমরা প্রথমবারের মতো রোগ প্রতিরোধমূলক ট্রায়াল চালানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছি।”

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চিকিৎসাটি জটিল ও ব্যয়বহুল হলেও স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ এই রোগে ভুগছেন এবং কয়েক লাখ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ জিন বহন করছেন। রোগাক্রান্ত পরিবারগুলো এই সাফল্যে নতুন আশার আলো দেখছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ