সিলেট, প্রতিনিধি : এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেছেন, জনগণের ঐক্য বন্দুকের গুলির চেয়েও শক্তিশালী। যারা অস্ত্রের শক্তিকে চূড়ান্ত ভেবেছে, তারাই বারবার ঐক্যবদ্ধ জনতার কাছে পরাজিত হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ঠিক আগমুহূর্তে ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতিকে সর্বদিক থেকে মেধাশূন্য করে দিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এদিন জাতি হারিয়েছিল তার শ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তানদের।
তিনি আরও বলেন, অন্যায়ের কোনো রং নেই। কষ্ট, নিপীড়ন, অবিচার ও বৈষম্যের রং এক। এ জাতিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। যতবারই বাঙালি জাতি শোষণ ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে, ততবারই তারা প্রতিবাদী কণ্ঠে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মানবতাবাদী ও মানবপ্রেমী প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে হবে। যারা মানুষের দুঃখ-কষ্টে কাঁদে, মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই করে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বুকে ধারণ করে—এমন নেতৃত্বই প্রয়োজন। সকলের অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছি, যার শূন্যতা আজও অপূরণীয়। স্বাধীনতার পর আমরা সে মানের বুদ্ধিজীবী গড়ে তুলতে পারিনি। শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, মাদক ও সন্ত্রাস থেকে তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করেই আগামীর বাংলাদেশে মেধাবী বুদ্ধিজীবী তৈরি করতে হবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ রানা, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা জামাল পাশা। এ সময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নগরীর চৌহাট্টাস্থ শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ও মহানগর ইউনিটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।