১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

৪ দাবি পূরণে আলটিমেটাম

admin
প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার, ২০২৫ ২২:০০:৫৬
৪ দাবি পূরণে আলটিমেটাম

Manual8 Ad Code

জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আয়োজিত শহীদি সমাবেশ থেকে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। দাবি পূরণে ১০০ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে তারা। এ সময়ে দাবি পূরণ না হলে সংগঠনটি আগামী ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) মার্চ ফর বাংলাদেশ কর্মসূচি পালন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ।

Manual1 Ad Code

আজ শুক্রবার বেলা ৩টায় রাজধানী শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ করেছে সংগঠনটি। এতে উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, শাপলা এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

এ ছাড়া ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) প্রধান সংগঠক আলী আহসান জোনায়েদ, বাংলাদেশের ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মারুফুর রহমান এবং এবি পার্টির নেতা আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী সরকারের কাছে তিন দফা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এক দফাসহ মোট চার দফা দাবি এবং নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সরকারের কাছে পেশ করা দাবিগুলো হলো আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করতে হবে এবং আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে, আদালতের মাধ্যমে এবং সবশেষে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধের করতে হবে; শাপলা গণহত্যার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রকৃত শহীদদের তালিকা প্রকাশ করে এই গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং তাদের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পেশ করা দাবিটি হলো সব দলের নির্বাচনী ইশতেহারে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা উল্লেখ থাকতে হবে। এটি না থাকলে দলকে বয়কট করবেন বলে জানান তিনি।

তিনি পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘এ দাবিতে আগামী ১০০ দিন ৬৪ জেলায় গণসংযোগ করবে ইনকিলাব মঞ্চ। যদি এই সময়ের মধ্যে সরকার কার্যকর কোনো ভূমিকা গ্রহণ না করে, তাহলে আগামী ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) শাহবাগ থেকে “মার্চ ফর বাংলাদেশে” কর্মসূচি থেকে সচিবালয় ঘেরাও করব আমরা। এতে আমরা কাফনের কাপড় পরে অংশগ্রহণ করব।’

ইনকিলাব মঞ্চের আয়োজিত এ শহীদি সমাবেশে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাঁদের বক্তব্যে তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা এবং দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরেন।

Manual2 Ad Code

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাত্রাবাড়ীতে শহীদ হওয়া সায়েমের মা বলেন, ‘আমি ১৯ জুলাই ছেলেকে হারিয়েছি। রাত-দিন এ যন্ত্রণা নিয়ে সময় যায়। আমার বুকটা এখনো শূন্য হয়ে আছে। বুকে সারাক্ষণ রক্তক্ষরণ হয়। আওয়ামী লীগ যেন আর কখনো বাংলাদেশে না আসতে পারে। চিরতরে তাদের নিষেধ করতে হবে।’

Manual8 Ad Code

আশুলিয়ায় শহীদ হওয়া সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা বলেন, ‘আমার সন্তানকে গাড়িতে রেখে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পোড়ানোর পর তার গায়ে মাংস ছিল না। যারা পুড়িয়েছে তারা কোন সাহসে বাংলাদেশে আবার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।’

শহীদ ইমাম হাসান তায়েফের ভাই বলেন, ‘আমাদের দুঃখ-দুর্দশা বাহির থেকে অন্যরা বুঝতে পারে না। এ হত্যার বিচারের জন্য এমন কোনো দুয়ার নাই যেখানে আমরা যাইনি। অথচ নয় মাসেও কোনো ফল পাইনি।’

Manual2 Ad Code

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর মো. তানভীর হায়দারের স্ত্রী তাসনুভা বলেন, ‘আমার স্বামীকে আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। গত ১৬ বছর আমাকে চাকরি দেওয়া হয়নি। আমার সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি।’

সমাবেশে আপ বাংলাদেশের প্রধান সংগঠক আলী আহসান জোনায়েদ বলেন, ‘আমরা যারা হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করতে দেখেছি, সেই জুলাই আহতরা, যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগ আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। জুলাইয়ের শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এ শপথ নিয়েছি।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আজ সময়ের বিবেচনায় আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, এ প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মাথায় স্পষ্ট করে ঢুকিয়ে রাখুন, সংস্কার নাকি নির্বাচন—এই খেলা বাদ দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামুন, যে সবার আগে গণহত্যাকারীদের বিচার হতে হবে।’