ইউএনও’র স্বেচ্ছাচারিতায় তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত বিশ্বনাথে কর্মরত সাংবাদিকরা

প্রকাশিত: ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২৫

ইউএনও’র স্বেচ্ছাচারিতায় তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত বিশ্বনাথে কর্মরত সাংবাদিকরা

 

বিশেষ প্রতিনিধি:-

সরকারি, প্রশাসনিক ও উপজেলার পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সভায় প্রবেশের অনুমতি না দেওয়ায় তথ্য সংগ্রহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্বনাথ উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার একাধিক গণমাধ্যম কর্মী।

 

 

 

সরকার নিবন্ধিত পত্রিকা ও প্রেস কাউন্সিলের আইনে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা সভা সহ উপজেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সভায় উপস্থিত না থাকায় অবাধ তথ্য উপাত্ত জনসম্মুখে তুলে ধরতে পারছেন না তারা এমনটি দাবী করছেন অনুমতি না পাওয়া সাংবাদিকরা।

 

 

 

সভা সমাবেশে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে একাধিক সাংবাদিকের পরিচয় ইউএনও বরাবরে জমা দেওয়ার পরও এ নিয়ে দীর্ঘ দুই বছর ধরে চলছে দেন-দরবার। সভায় উপস্থিত প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় বিষয়টি সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত ও মৌখিক ভাবে অবগত করে ও কোন সমাধান না হওয়ায় বিষয়টি এখন রহস্যময় ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং সিন্ডিকেট বলে গুঞ্জন উঠেছে। সভায় প্রবেশের দাবী জানিয়ে ইউএনও ও জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে কারণ জানার তর্ক-বিতর্কের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

 

 

ভিডিওতে দেখা যায় বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকেরা একটি আইনশৃঙ্খলা সভার পূর্ব প্রস্তুতিতে প্রবেশ করে ইউএনও কে সভায় প্রবেশের বাধার কারণ জানতে প্রশ্ন করছেন।

 

 

 

এতে ইউএনও আরো তিনটি সংগঠনের সাংবাদিকদের অনুমতি রয়েছে বলে উল্লেখ করছেন। প্রশ্নকারী বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েস্তা মিয়া এসময় উল্লেখ করেন আরো তিনটি পেলে আমরা কেন পাবনা, আমরাতো আমাদের বৈধতার পরিচয় আপনাকে অবগত করেছি। এসময় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা স্থান ত্যাগ করতে দেখা যায়।

 

 

বিশ্বনাথ উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের স্থানীয় একাধিক সংগঠন থাকায় এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি। ১৯৮৩ সালে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব নামে একটি সাংবাদিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা পায়। এরপর এই সংগঠনের গঠন সাল ও তারিখ নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে সংগঠনটি ভেঙে দুইটি ভাগে বিভক্ত হয় এবং দুটি অফিস নিয়ে এর কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসে। (একটি বর্তমানে মডেল প্রেসক্লাব নামে প্রকাশিত) এরপর এই দুটি সংগঠনের সাংবাদিকদের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হলে সাংবাদিক ইউনিয়ন নামে ৩ জন সদস্য নিয়ে আরেকটি সংগঠনের জন্ম হয়।

 

 

সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর আগের দুইটি সংগঠন তাদেরকে বৈধতার প্রশ্নে দীর্ঘ সময় একঘরে করে রাখে। আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংবাদিকরা প্রশাসনিক সভা সমাবেশে তথ্য সংগ্রহের অনুমতি পায়। এরপর থেকে তারা তিনটি সংগঠন একধরনের সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। সংগঠনে বাহিরে থাকা আরো কেউ যাতে কোন সংগঠন করতে না পারে সেই সিদ্ধান্তঃ ও নিয়ে রেখেছে তারা। ইতিপূর্বে আরো কয়েকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়ে উদ্যোক্তারা ব্যর্থ হয়েছেন।

 

 

বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বয়কটের ঘোষণা, নতুন সংগঠনকে দাওয়াত না দিতে দপ্তরে দপ্তরে বারণের বার্তা, এ পেশায় নতুনদের স্থান না দেওয়া, সংগঠনের বাহিরে থাকা বৈধ সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাধা, সংগঠনের সদস্য না করা সহ অফিস আদালতের ঠিকাদারি গ্রহণ, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে ব্যাক্তিগত সখ্যতা তৈরী, ইউএনও কর্তৃক উপহার উপঢৌকন গ্রহণ, মাদক কারবারে জড়ানো, টিউবওয়েল বাণিজ্য, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন সহ নানা বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করার তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে।

 

 

 

তাদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কারো না থাকায় তাদের অপকর্মগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ পাচ্ছেনা দীর্ঘদিন যাবত।

 

 

 

সংগঠনের বাহিরে কেউ সংগঠন প্রতিষ্ঠা, ও সাংবাদিকতা করতে না পারার একটি অঘোষিত নিয়ম গড়ে তুলেছে বিশ্বনাথের সাংবাদিক সংগঠনগুলো। তাদের এমন ঔপনিবেশিক আচরণের কারণে এমন একটি মহান পেশা ছেড়ে দিয়ে অনেকেই নিভৃতে চলে যাওয়ার সংখ্যা বেশ বড় বলে জানা গেছে।

 

 

 

এরি মধ্যে ২০২৩ সালে স্থানীয় ১২ জন সাংবাদিক মিলে বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাব নাম করণে একটি সাংবাদিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর তাদের বৈধতার সকল প্রকার তথ্য উপাত্ত উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, স্কুল কলেজ ও গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালতে জমা দেন এবং তথ্য সংগ্রহে অনুমতি চান।

 

 

উপজেলা প্রেসক্লাব গঠনের সাথে সাথে পুরনো সংগঠন গুলো একত্র হয়ে সভা সমাবেশে দাওয়াত না দিতে উঠে পড়ে লাগে। প্রশাসন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে সম্পৃক্ত সাংবাদিকের দাওয়াত, প্রবেশের অনুমতি না দিতে আবদারের অবস্থান স্পষ্ট করে।

 

 

বিশ্বনাথে রাজনৈতিক দালাল উপাধি পাওয়া সংগঠনগুলোর সাংবাদিকদের অপকর্মের বিষয়ে জনসচেতনতা দিনদিন বৃদ্ধি সহ চিহ্নিত অপ-সাংবাদিকদের জনপ্রিয়তায় পড়ছে ভাটা। বিগত ৫ আগস্টের আগে বিতর্কিত কর্মকান্ডে কারণে সরকার পতনের পর অনেকই গা ঢাকা দেন কিছু দিন। কিন্তু তারা আবার সক্রিয় হয়ে ফিরে এসেছে এমন মন্তব্য এখন শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।

 

 

 

ইদানিং বিশ্বনাথ উপজেলা প্রেসক্লাবের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানের অংশ গ্রহণের একটি ইতিবাচক সাড়া লক্ষ্য করা গেছে। সর্বোপরি বিশ্বনাথে বস্তুুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের সাংবাদিক সংগঠন ও মিডিয়াকর্মী হিসেবে উপজেলা প্রেসক্লাবের সাথে জড়িয় সাংবাদিকদের সুনাম বৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতায় আরো গতিশীল ও স্থানীয় ভাবে অবাধ তথ্য পরিবেশনে একটি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

 

 

 

গেল ১৯ মার্চ ইউএনও দপ্তরে তর্ক-বিতর্ক হওয়ার পর তাৎক্ষণিক পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হাই এর নেতৃত্বে বিষয়টি সমাধানের জন্য ৪টি সংগঠনে সাংবাদিকদের নিয়ে ২২ মার্চ একটি বৈঠক করেন।

 

 

তাতেও কোন সমাধান না হলে পরদিন ২৩ মার্চ পৌর বিএনপির ইফতারে যায়নি বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, মডেল প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়ন। পৌর বিএনপির ইফতার মাহফিলের নিউজ কাভারেজ করেন উপজেলা প্রেসক্লাব ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা। পৌর বি

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ