১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জেলা প্রশাসকের প্রস্তুতি সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতি

admin
প্রকাশিত ১৯ মার্চ, বুধবার, ২০২৫ ২২:৩১:৩৪
জেলা প্রশাসকের প্রস্তুতি সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতি

Manual4 Ad Code

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের লাঙ্গলবন্দ এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের স্নান উৎসবের প্রস্তুতি সভায় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

Manual1 Ad Code

ঘটনাস্থলে থাকা সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ৪ ও ৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় স্নান উৎসব উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা।

সভার একপর্যায়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহা ও বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি শিপন সরকার শিখনকে ফ্যাসিস্টের দোসর বলে আখ্যায়িত করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে সভায় উপস্থিত অন্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে দফায় দফায় তাঁরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসবের আয়োজক লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের বর্তমান সভাপতি সরোজ কুমার সাহা। ২০১৫ সালে লাঙ্গলবন্দ স্নানে ১০ ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তৎকালীন উদ্‌যাপন পরিষদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ মনে করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে তৎকালীন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সুপারিশে সরোজ কুমার সাহাকে সভাপতি করা হয়।

২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টানা ১০ বছর ধরে সরোজ কুমার সাহা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর এই দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব থাকায় অন্য নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবের প্রস্তুতি সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জে লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবের প্রস্তুতি সভায় দুই পক্ষের হাতাহাতি।

এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি জয় কে রায় চৌধুরী এবং বিএনপির নেতা গয়েশ্বর রায় চৌধুরীর মেয়ে অপর্ণা রায়ের নেতৃত্বে ‘লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদ্‌যাপন ফ্রন্ট’ নামের একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের মধ্যে বিরোধ চলমান রয়েছে।

হাতাহাতির বিষয়ে জানতে চাইলে জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি বলেন, ‘আজকের বিশৃঙ্খলার ঘটনা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই। তবে এতটুকু বলব, জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। উনারা দুই পক্ষের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন এবং আমরা উনাদের সিদ্ধান্তে শতভাগ একমত।

আমরা উভয় পক্ষ এতে সম্মত জানিয়েছি। এখানে এক থেকে দুই ব্যক্তির কারণে আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই দুই–একজন ব্যক্তিকে যদি এখানে রাখা হয়, তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা চাই আমাদের ধর্মীয় উৎসবটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হোক।’

Manual1 Ad Code

লাঙ্গলবন্দ স্নান উদ্‌যাপন পরিষদের বর্তমান সভাপতি সরোজ কুমার সাহা বলেন, ‘লাঙ্গলবন্দ স্নান উদ্‌যাপনের জন্য আমাদের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি রয়েছে। বিগত দিনগুলোতে আমরা এই কমিটির মাধ্যমে লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদ্‌যাপন করে আসছি। এর মধ্যে আরেকটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে আজকে এই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে। এগুলো হিন্দু সম্প্রদায়ের ভালো লক্ষণ না। এগুলো যেমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ক্ষতি হবে, তেমনি দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।’

Manual2 Ad Code

নারায়ণগঞ্জের ডিসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্মেলনকক্ষে আমাদের সামনে এমন কোনো ঘটেনি। বাইরে হয়তো কিছু হতে পারে; যা আমার জানা নেই।’

Manual2 Ad Code