নেপালের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে তিনি জানান, অভ্যুত্থানের পরপরই জেনারেশন জেড আন্দোলনকারীরা সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দাবি তুলেছিল। তবে তিনি সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “সংবিধান রক্ষার জন্য যদি শহীদও হতে হয়, তবে আমি প্রস্তুত।”
সভায় সাবেক রাষ্ট্রদূত মহেশ মাস্কে, মানবাধিকারকর্মী মাল্লা কে সুন্দর এবং সিনিয়র আইনজীবী টিকাশঙ্কর ভট্টরায়সহ নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করেন, তিনি সংবিধান প্রণয়নে ভূমিকা রেখেছেন, তাই সাংবিধানিক সীমার বাইরে গিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবেন না।
এর আগে ১২ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগেই সংসদ ভাঙার দাবি তুলেছিল আন্দোলনকারীরা। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পৌডেল তা নাকচ করেন। পরে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়।
সভায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রেসিডেন্টকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা সীমিত করা যাবে না এবং প্রতিহিংসার মনোভাব থেকেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়। তাঁরা দুর্নীতি ও প্রাণহানি নিয়ে তদন্তে সহায়তার আশ্বাস দেন এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব দলকে আস্থায় নেওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রেসিডেন্ট পৌডেল স্বীকার করেন, বিশেষ পরিস্থিতির কারণে সংবিধান কিছুটা আপসের মুখে পড়েছে। সংবিধানের ৭৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার গঠনের কথা থাকলেও কার্কির নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে ৬১ অনুচ্ছেদের আওতায়। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, তাঁর প্রধান লক্ষ্য নির্বাচন এবং সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।
এ ছাড়া তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং জানান, কঠিন পরিস্থিতিতেও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। আহত অবস্থায় নেপালি কংগ্রেস সভাপতি শের বাহাদুর দেউবার সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ড (পুষ্পকমল দাহাল), মাধব নেপাল এবং কেপি শর্মা অলিও তাঁকে সংবিধানসম্মত সমাধান খুঁজতে সহযোগিতা করেছেন।